Anondadhara Online
Published on Anondadhara Online (https://anondadhara.com)

প্রথম পাতা > গরমে আরাম

image

গরমে আরাম

Bibek এর ছবি
২ বছর ১০ মাস ১১ দিন আগে
  • facebook [1]
  • twitter [2]
  • google+ [3]
  • email [4]
  • print [5]
  • print [6]

গরম! উফ নাজেহাল অবস্থা, বৃষ্টি পড়ছে তবে রোদের তেজও কম নয়। আর ভ্যাপসা গরমে বাইরে থেকে কতক্ষণে ঘরে যাওয়া যায়, তা নিয়ে ব্যস্ত সবাই। স্কুলগুলোয় বাচ্চারা গরমে অস্থির, অফিস-বাসা সর্বত্রই সবাই একটু প্রশান্তির পরশ চায়। রোদ থেকে পালিয়ে কোনোক্রমে এয়ারকন্ডিশন্ড রুমের ঠাণ্ডায় আরাম পেতে চায়। গরম বলে তো আর উৎসব থেসে থাকছে না। বিয়ে হোক বা ঘরোয়া উৎসব- এই গরমে মেকআপ তো করতেই হয়। আর গরমে সঠিক উপায়ে মেকআপ করতে না পারলে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। খাবার-দাবারেও দারুণ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। পেটের গোলমাল, বদহজম ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। একটু পরিশ্রমে হাঁপিয়ে উঠতে হয়। তবে যা-ই হোক, যত অসুবিধা থাকুক, গরমে তো আর নিয়মিত কাজকর্ম বন্ধ করে রাখা যায় না। গরমেও ভালো থাকা যায় কিছু নিয়ম মেনে চললে।

গরমে সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা যায় ডিহাইড্রেশনের। সারাদিন বাইরে যারা কাজ করেন বা কাজের প্রয়োজনে বাইরে এই গরমে ঘোরাঘুরি করতে হয়, তাদের ক্ষেত্রে শরীরে ফ্লুইড ব্যালান্স কমে যেতে পারে। স্কুলে ছোটদেরও ঘেমে পানির ঘাটতি হতে পারে। তাই সারাদিনে প্রচুর পানি পান করা প্রয়োজন। পানির অভাবে হাইপারটেনশনের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। হঠাৎ পেটে ব্যথা বা খুব ক্লান্তিবোধ ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ। অনেকে যদি টের না পান ডিহাইড্রেট হয়ে যাচ্ছেন, তাহলে অনেক সময় ইউরিন ইনফেকশন হতে পারে। এ সময়ে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। গরমে ডায়রিয়া বা বদহজমের মতো সমস্যা এড়িয়ে চলতে কয়েকটা নিয়ম মেনে চলা জরুরি। পানি ফুটিয়ে খাওয়া ভালো। যারা বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকেন, তারা ঘর থেকে পানি নিতে পারেন বা মিনারেল ওয়াটার খেতে পারেন। সাধারণ হাইজিনের দিকে খেয়াল রাখুন। বাইরে কাটা ফল বা জুস না খাওয়া ভালো। আস্ত ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন।

বরফ দেয়া ঠাণ্ডা পানি বা খোলা আইসক্রিম কম খান। বাইরে খাবার কম খাওয়া চেষ্টা করুন। কোনোকিছু খাওয়ার আগে অবশ্যই হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন। ব্যাগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রেখে দিতে পারেন। অফিসে লাঞ্চের জন্য বাসার খাবার সঙ্গে নিতে পারেন। জন্ডিস বা টাইফয়েডের মতো অসুখও পানি থেকে হয়। এগুলোর জন্য আলাদা ভ্যাকসিন আছে। তবে জন্ডিস বা টাইফয়েডের মতো অসুখের প্রতিরোধেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পার্সোনাল হাইজিন জরুরি। রাস্তায় হাত না ধুয়ে খাওয়ার অভ্যাস বদলাতে হবে।

ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গুর মতো ইত্যাদি অসুখও এ সময় অনেকের হয়ে থাকে। মশার দাপট বৃষ্টির দিনগুলোয় বাড়ে। তাই মশারি, মসকিটো রিপেলেন্ট ক্রিম ইত্যাদি ব্যবহার করুন। সর্দি-কাশি, জ্বর ইত্যাদি সমস্যা অবহেলা করবেন না। বাচ্চারা যেন ঘেমে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। ঘেমে গেলে ঘাম মুছে পরিচ্ছন্ন করে রাখুন। জরুরি ওষুধ ঘরে রাখুন। প্রচুর পানি বা জুস পান করুন।

খাবার-দাবারে খেয়াল রাখুন- ভোজনরসিকদের জন্য এ সময়টা বেশি সুবিধাদায়ক নয়। তবে এর মধ্যেও তো বিয়েবাড়ি, পার্টিসহ ফ্যামিলি গেটটুগেদার থাকবে, তাই বাকি দিনগুলো স্বাস্থ্যের কথা ভেবে একটু বুঝে খাবার খান। গরমে হাইড্রেট থাকার জন্য প্রচুর পানি পান করুন। শরীরে পানির ভারসাম্য ঠিক রাখতে লবণ-চিনি দেয়া লেবুর শবরত, ডাবের পানি, দইয়ের শবরত, ফলের রস বেশ ভালো। ডাবের পানিতে রয়েছে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, সালফার। বাইরে বের হলে কোল্ড ড্রিংকসের বদলে গ্লুকোজ ওয়াটার সঙ্গে রাখুন, হারবাল টি যেমন পিপারমিন্ট বা গ্রিন টি খেতে পারেন। দিনে অন্তত দুই লিটার পানি খান। এ সময় ঘামের ফলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ পানি বেরিয়ে যায়। তাই যথেষ্ট পরিমাণে ফ্লুইড ইনটেক খুব জরুরি। ওয়ার্ক আউট করার আগে যথেষ্ট পানি খেয়ে তবেই শুরু করুন। প্রয়োজনে লেমোনেড বা আইসড টিও খেতে পারেন, তবে অল্প। সারাদিনে ক্লান্তির পর এগুলো খেলে রিফ্রেশিং লাগলেও কিছু অপ্রয়োজনীয় ক্যালোরিও শরীরে ঢুকে যায়। সোডা, ক্যানড জুস বা অ্যালকোহল পান না করাই ভালো। বরং এর বদলে বাড়িতে তৈরি করুন। ফলের জুস বা স্মুদি। গরমের সময় রাতে হালকা খাবার খান। এ সময় বিভিন্ন ঠাণ্ডা স্যুপ আর সালাদ খেতে পারেন। বাড়িতে পাতা ঠাণ্ডা দই দিয়ে সালাদ বা ঠাণ্ডা টমেটো স্যুপও খেতে ভালো লাগবে। আর সারাদিনে স্ন্যাকস হিসেবে ফল খাওয়া খুব জরুরি। হাই ওয়াটার কনটেন্ট রয়েছে এ রকম ফল ও সবজি বেছে বেছে খান। তরমুজ, ডাব, শসা, পেঁপের মতো সামার ফ্রুটস দিনে অন্তত একটা করে খেতে পারলে ভালো। তরমুজে প্রচুর পারিমাণে বিটা ক্যারোটিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ‘বি’ রয়েছে। এছাড়া ভিটামিন ‘সি’, জিঙ্কের মতো অত্যাবশ্যকীয় মিনারেলও রয়েছে। ভালো লাগবে এমন ফ্রেশ ফ্রুটস জুস বা স্মুদি বা শরবত তৈরি করে খান, সকালের নাশতায় ভালো লাগবে। জুস, সালাদ প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোকের মতো সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করবে। পাকা আম, কাঁঠাল হাই ক্যালরিযুক্ত খাবার, এগুলো অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে বদহজমের সমস্যা দেখা যায়।

তবে মৌসুমি ফল হিসেবে একেবারে না খেলেই নয়। প্রতিদিনের খাবার ডায়েটে কুমড়ো, লাউয়ের মতো সবজি রাখতে পারেন। দই, লেবুর রস বা হালকা মসলা দিয়ে এই সবজিগুলো রান্না করতে পারেন। গরমে তেল-মসলা দিয়ে কষানো রান্না বেশি উপাদেয় নয়। শসা, টমেটো পেট ঠাণ্ডা রাখতে উপযোগী। এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন ‘সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। তেল-মসলা দেয়া গ্রেভির বদলে হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খান। তেলে ভাজার বদলে বেকড বা স্টিমড ফুড খান। চিকেন স্টু, ফ্রুট সালাদ এ সময়ে উপাদেয় খাবার। মুরগির মাংস বা মাছ মেরিনেট করে রান্না করলে মেয়নিজ বা মাখনের মতো হাই ক্যালরিযক্ত জিনিস এড়িয়ে চলুন। ময়দা, ঘি, ক্রিম, বাদাম, রেড মিটের মতো খাবার ডায়েট লিস্টে না থাকলেই ভালো। খাবারে ওলট-পালট গরমের সময় পেটের গ-গোল বা হজমের সমস্যা নিয়মিত দেখা যায়, তাই খাবার সহজপ্রাচ্য হলে ভালো। সকালে ঘুম থেকে উঠে লিকার চা ও বিস্কুট খেতে পারেন। সঙ্গে দই বা ছানা। লাঞ্চে ও রাতে হালকা খাবার। সারাদিন ফল, পানি, ফলের জুস প্রচুর খাবেন।

 

গরমে ব্যায়াম

এই গরমে জিম বা সকালে জগিং করতে একটু অস্থিরতা কাজ করে। তবে ওজন কমানোর জন্য গরম আদর্শ সময়। গরমে ঠাণ্ডা ড্রিংকস খাওয়ার ইচ্ছাটা দমানো অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়। তাই বেড়ে যাওয়া ওজন কমানো জরুরি। যারা অত্যন্ত স্বাস্থ্য সচেতন, খাবারের ব্যাপারে প্রতিটি পদক্ষেপ ভেবে চিন্তে নেন। তাদের জন্যও গরমে নানা অসুখ-বিসুখের মোকাবেলা করে সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত এক্সারসাইজ করা প্রয়োজন। এক্সারসাইজের মাধ্যমে ঘাম ঝরালে শরীরে মেটাবলিজম প্রক্রিয়া দ্রুত কাজ করে, ওজনও কমে তাড়াতাড়ি। তবে এক্সারসাইজের আগে ও পরে পর্যাপ্ত পানি বা এনার্জি ড্রিংক খাওয়া প্রয়োজন। এ সময় সকাল সকাল দৌড়াতে পারেন বা হালকা জগিং, এতে সারাদিন কাজ করার এনার্জি পাবেন। গরমে সাঁতার খুব ভালো এক্সারসাইজ। যোগাসন বা স্ট্রেচিংও ফিট থাকতে সাহায্য করে। যারা নিয়মিত জিমে যান তারা হালকা ওয়েট ট্রেনিং করতে পারেন। যোগাসনের মাধ্যমে শরীরের বেশি পরিমাণ অক্সিজেনের অনুপ্রবেশ ঘটে। নার্ভাস সিস্টেম ও রেসপিরেটরি সিস্টেম সুস্থ থাকে। নিয়মিত যোগাসন এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে।

প্রাণায়াম ও মেডিটেশন সব বয়সের মানুষের পক্ষেই উপযোগী। অনেকক্ষণ এসির মধ্যে বসে থাকলে মাঝে মধ্যে হেঁটে আসুন। গরমের সময় খেয়াল করবেন এক্সারসাইজের সময় খুব বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন কিনা। খারাপ লাগলে বিশ্রাম নিন। বাইরে হাই ইনটেনসিটি এক্সারসাইজের সময় অনেকের হিটস্ট্রোক বা হিট ক্র্যাম্পের সমস্যা দেখা দেয়।

 

গরমের রূপচর্চা

গরমের সময় ত্বকে ঘাম ও তেল নিঃসরণের পরিমাণ বেড়ে যায়। এর ওপর ধুলো-ময়লা, নোংরা জমে ত্বক নির্জীব ও অনুজ্জ্বল হয়ে পড়ে। তাই বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে গরমে ত্বকের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। সারা বছরের মতো একইভাবে গরমেও ত্বক ভালো রাখার জন্য ক্লিনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং করতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফেসওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিন। স্বাভাবিক, শুষ্ক বা তৈলাক্ত যে ধরনের ত্বকই হোক না কেন গরমের দিনে দু’তিনবার ক্লিনজিং কিন্তু মাস্ট। গরমে ফ্রেশ থাকার জন্য টোনার প্রয়োজন। রোজ বা ল্যাভেন্ডারের মতো ফুলের নির্যাস দিয়ে তৈরি টোনার গরমের জন্য আদর্শ। স্বাভাবিক থেকে শুষ্ক ত্বকের জন্য ঠাণ্ডা পানিও ভালো। ত্বক পরিষ্কার করার পর তুলায় স্কিন টোনার বা ঠাণ্ডা গোলাপজল নিয়ে ভালোভাবে মুখ, গলা ও ঘাড় মুছে নিন। তবে আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় বা অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থাকে, তাহলে অ্যাসট্রিনজেন্ট লোশন ব্যবহার করুন। এটি ত্বকে তেলভাব কম রাখতে সাহায্য করে। গরমেও ময়েশ্চারাইজার লাগানো জরুরি। রাতে ঘুমানোর আগে মুখ পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ম্যাসাজ করুন। ঘুমানোর আগে অতিরিক্ত ক্রিম মুছে ফেলুন। অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বকে ময়েশ্চারাইজিং প্রয়োজন নেই।

সূর্যের ক্ষতিকর আলট্রা ভায়োলেট রশ্মির প্রভাবে সানট্যান, সানবার্ন, ডার্ক প্যাচ, র‌্যাশসহ আরো হাজারো সমস্যা দেখা দেয়। তাই গরমে দিনের বেলা বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই উচ্চ এসপিএফ সানস্ক্রিন লাগাবেন। সানস্ক্রিন সূর্যের ইউভিএ ও ইউভিবি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। মুখের সঙ্গে গলা, ঘাড়, হাত ও অন্যান্য শরীরে এক্সপোসড অংশেও সানস্ক্রিন লাগান। গরমে ঘাম বেশি হয়, তাই রোদে বেশিক্ষণ বাইরে থাকলে দুই ঘণ্টা পরপর সানস্ক্রিন লোশন লাগান। রোদে অনেকেরই সানট্যানের সমস্যা দেখা দেয়। সানট্যানের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গোসলের আগে টকদই, চালের গুঁড়ো ও হলুদ বাটা মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে শরীরের এক্সপোসড অংশে লাগান এবং শুকালে গোসল করুন। গরমে অনেকেরই ব্রণ বা র‌্যাশের সমস্যা হয়ে থাকে। হলুদ ও নিমপাতা একসঙ্গে বেটে ব্রণ ও র‌্যাশের ওপর লাগিয়ে নিন তা কমে যাবে। এছাড়া নিমপাতা পানিতে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে সে পানিতে গোসল করতে পারেন, র‌্যাশ কমে যাবে।

 

গরমে উপযোগী ফেস মাস্ক

শসার মাস্ক : শসা ত্বক ঠাণ্ডা রাখে ও ন্যাচারাল অ্যাসট্রিনজেন্ট হিসেবে কাজ করে। আধা কাপ কোরানো শসার সঙ্গে ওটমিল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ঘাড়ে ও গলায় লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক ঠাণ্ডা হবে, সঙ্গে ত্বকের কালোভাব দূর হবে।

দইয়ের মাস্ক : ট্যান রিমুভ করতে টকদই দারুণ কার্যকর। ২ চা-চামচ দইয়ের সঙ্গে ২ চা-চামচ মসুর ডাল গুঁড়ো সামান্য মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে ট্যানের ওপর লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

ফ্রুট মাস্ক : শসা, পেঁপে, তরমুজ ত্বক ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে। যখন যে ফল খাবেন, তার এক টুকরো মুখে ঘষে নিন। নিমিষে ত্বকের জেল্লা ফিরে আসবে।

বেকিং সোডা ঘামের দুর্গন্ধ তাড়াতে বেশ উপযোগী। পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে আন্ডার আর্মে লাগাতে পারেন। একটু লেবুর রসও মিশিয়ে নিতে পারেন। ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন।

গরমে চুলের সমস্যা বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেড়ে যায়। রোদে বেশিক্ষণ থাকার জন্য চুলে সানবার্নের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও রোদের তাপ, ধুলো-ময়লা, অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়া এ রকম নানা কারণের জন্য চুল সহজেই খারাপ হয়ে যায়। চুল নিস্তেজ ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। চকচকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলও নিষ্প্রভ হয়ে যায়। গরমে ঘেমে চুলের গোড়ায় গন্ধ হয়। চুলে ঘাম জমলে সহজেই ময়লা জমে। এর থেকে অনেক সময় স্ক্যাল্পেও ইনফেকশন বা র‌্যাশের সমস্যাও দেখা দেয়। প্রয়োজন একটু যত্নের। গরমে চুল ভালো রাখার জন্য সবার প্রথমে চুল ও স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখাটা জরুরি। কারণ নোংরা, অপরিষ্কার চুল বা স্ক্যাল্প থেকে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। সপ্তাহে অন্তত তিনদিন শ্যাম্পু করুন। তবে যারা রোজ বাইরে বের হন প্রয়োজনে, তারা প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে মাইল্ড হারবাল শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

সানবার্ন ও চুলের সমস্যায় কেরাটিন, জোজো বা অয়েল, প্রোটিন সমৃদ্ধ ডিপ কন্ডিশনার রোদে পোড়া চুলের জন্য আদর্শ, ইউভি প্রটেকটিভ লিভ ইন কন্ডিশনার গরমে ব্যবহার করুন। পাতলা, নেতিয়ে পড়া চুলের জন্য ওয়াটার বেসড কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। চুল খুব রুক্ষ লাগলে কন্ডিশনার লাগানোর পর ভিনেগার ও পানি মিশিয়ে লাগান।

চুলের আগা ফেটে গেলে গরমের শুরুতেই চুল ট্রিম করে নিন। চুল ছোট করতে না চাইলে টুপি বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন রোদের হাত থেকে বাঁচতে। আর চুল বেঁধেও রাখতে পারেন। গরমে উপযোগী হেয়ার প্যাক ভেতর থেকে চুলে পুষ্টি জুগিয়ে চুল মজবুত রাখতে সাহায্য করে।

দুটো পাকা কলা ভালোভাবে চটকে নিন। এর সঙ্গে অলিভ অয়েল, মধু, টকদই মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে নিন। হালকা শুকালে শ্যাম্পু করে নিন। দু’তিন টেবিল চামচ দুধ ও সামান্য মধু একসঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে নিন। হালকা হাতে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। শাওয়ার ক্যাপ পরে নিন। প্যাক আধা শুকনো হলে ধুয়ে ফেলুন।

গরমে ফ্রেশ থাকার জন্য দিনে দু’বার গোসল করার চেষ্টা করুন। গোসলের সময় শ্যাম্পু, স্ক্র্যাবার বা শাওয়ার জেল ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক থেকে ধুলো-ময়লা সহজে পরিষ্কার হয়ে যাবে। চন্দন, গোলাপের মতো প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ বডি শ্যাম্পু শাওয়ার জেল ব্যবহার করুন। এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলো শরীর ঠাণ্ডা রাখে এবং হিট র‌্যাশের সমস্যা কম রাখতেও সাহায্য করে। গোসলের সময় ঘাড়, পায়ের অংশ ও আন্ডার আর্ম ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে ভুলবেন না। গোসলের পানিতে গোলাপ পাপড়ি ছড়িয়ে নিন, ফ্রেশ লাগবে।

 

মেকআপ

গরমে যতটা সম্ভব কম মেকআপ করুন। মেকআপ শুরু করার আগে পরিষ্কার কাপড়ে বরফ দিয়ে মুখে ও গলায় হালকাভাবে ঘষুন। এতে অল্পতেই ঘেমে যাবেন না। বেশিক্ষণ মেকআপ ফ্রেশ থাকবে। তারপর তুলায় অ্যাসট্রিনজেন্ট লোশন বা টোনার নিয়ে ভালোভাবে মুখ মুছে নিন। দিনে মেকআপের জন্য সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন। ফাউন্ডেশন লাগানোর প্রয়োজন নেই। আর রাতের অনুষ্ঠানের জন্য ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন। তবে ক্রিম বেসড ফাউন্ডেশন লাগাবেন না। গরমে ওয়াটারবেসড ফাউন্ডেশন লাগান। প্রয়োজনে ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সামান্য পানি মেশাতে পারেন। এরপর কমপ্যাক্ট পাউডার লাগিয়ে নিন। এতে মেকআপ ভালো করে সেট করবে। দিনে হালকা কাজল, রাতে আইলাইনারও ব্যবহার করতে পারেন। ঠোঁটে হালকা গোলাপি, পিচ বা ব্রাউন লিপস্টিক। সাজসজ্জায় গরমে নিজে আরামে থাকুন, অন্যদের চোখে আরাম দিন। পোশাকেও হালকা রঙ, পাতলা কাপড় আরাম দেবে।

ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন গরমে।

 

সহজ টিপস

* খুব প্রয়োজন না হলে বাইরে বের না হওয়াই ভালো।

* গরমে রোদে বের হলে ছাতা ও সানগ্লাস ব্যবহার করুন।

* গরমে দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত রোদ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

* গরমের সময় সারাদিনে মুখে বেশ কয়েকবার পানির ঝাপটা দিন, ত্বক পরিষ্কার থাকবে।

* সারাদিনে যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করুন।

* যারা বাইরে বাইরে ঘুরে কাজ করেন, তারা গ্লুকোজ মিশ্রিত পানি বা লবণ-চিনির পানি খেতে পাবেন।

* ব্যাগে ওয়েট টিস্যু ক্যারি করুন। ঘাম হলে মুখ-ঘাড় মুছে ফেলুন।

* ছোটদের ঘাম যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। যথেষ্ট পানি পান করান।

Anondadhara Series

পর্ব ৪৯৯ [7]

Author

রাহনুমা শর্মী [8]

Photographer

শাহরিয়ার কবির হিমেল [9]

Hide teaser Image

নীড়পাতা

যোগাযোগ

ডেইলি স্টার সেন্টার

৬৪-৬৫ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ,

ঢাকা - ১২১৫

ফোন : ৯১৩১৯৪২, ৯১৩২০২৫

সার্কুলেশন/বিজ্ঞাপন : ৯১৩২১১৬

সর্বশেষ সংবাদ

  • থিয়েটার করব বলে কখনো চাকরি করিনি : ফয়েজ জহির

    ২ বছর ২ মাস ৭ দিন আগে
  • রাঁধানী রান্না

    ২ বছর ২ মাস ৭ দিন আগে
  • ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ফ্যাশন

    ২ বছর ২ মাস ৮ দিন আগে
  • সততা এবং আত্মবিশ্বাস থাকলে কোথাও সমস্যা হয় না : তানিন তানহা

    ২ বছর ২ মাস ৮ দিন আগে
  • কাং ইয়াতসে

    ২ বছর ২ মাস ৮ দিন আগে

ট্যাগস

  • diet
  • home remedy
  • health
  • diet tips
  • vegetable diet
  • deepika padukone
  • ranveer singh
  • health tips
  • mental health
  • office management
  • food habits
  • clean

এখানে খুঁজুন

অনুসন্ধান ফরম

অনুসন্ধান

Source URL: https://anondadhara.com/2019/07/22/grme-aaraam