শীত এলেই উৎসবমুখর থাকে চারদিক। সেই সঙ্গে নানা ধরনের খাবার-দাবারের আয়োজন। সবজি থেকে শুরু করে পিঠা-পায়েসসহ নানা আয়োজন। সব মিলিয়ে পেটের সমস্যা হওয়াটা মোটেও অসম্ভব কিছু নয়। খাবার-দাবারে অসচেতনতার কারণে এই শীতের সময়টাতে বেশি দেখা যায় অ্যাসিডিটি, গ্যাসট্রোএন্টেরাইটিস ও জন্ডিস।
তৈলাক্ত খাবার অনেক সময় অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে অ্যাসিডিটি, বুক জ্বালা, বমি বমি ভাব হতে পারে। যাদের ক্রনিক অ্যাসিডিটি আছে তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরো বাড়ে। তবে এজন্য সব খাবার খাওয়া বাদ দিতে হবে এমন নয়। তবে ফ্যাটি ও তৈলাক্ত খাবার কম খেতে হবে। দুটো মিলের মধ্যে খুব বেশি সময়ের ব্যবধান যেন না হয়। খাবার খাওয়ার অনেকক্ষণ গ্যাপ হলে অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় মৌসুমি ফল, সবজি রাখুন। আর সঙ্গে অবশ্যই ব্যায়াম করতে হবে। শীতে জড়সড় না থেকে শারীরিক কসরত করুন। অনেকে শরীরে অস্বস্তি হলেই অ্যান্টাসিড খেয়ে ফেলেন। অ্যান্টাসিড জেল মাঝে মধ্যে খেলে অসুবিধা হয় না। রেনিটিডিন গ্রুপের ওষুধ খেলেও খুব একটা সমস্যা হয় না। তবে পিপিআই জাতীয় অ্যান্টাসিড বেশিদিন ধরে খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। বাইরের তেলেভাজার জিনিস খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ বাইরের তেলটা দেখা গেছে বারবার ব্যবহার করার প্রবণতা আছে, যা শরীরের পক্ষে একদমই ভালো নয়।
জন্ডিস পানিবাহিত রোগ, তাই বাইরের খাবার এবং পানীয়র ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এ সময়ে দু’ধরনের জন্ডিস বেশি দেখা যায়- হেপাটাইটিস ‘এ’ ও ‘ই’। এ দু’ধরনের জন্ডিস হলে বমি বমি ভাব, তলপেটে অস্বস্তি, দুর্বলতা ইত্যাদি হতে পারে। হেপাটাইটিস ‘এ’-এর লক্ষণ হলো মাংসপেশির দুর্বলতা, পেট ব্যথা, খিদে কমে যাওয়া ইত্যাদি। হেপাটাইটিস ‘ই’ পানিবাহিত। খাবার ও পানি থেকেই প্রধানত এ রোগ ছড়ায়। লক্ষণগুলো প্রকট হতে সময় লাগে। খিদে না পাওয়া, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, জ্বর, গিটে ব্যথা ইত্যাদি এর প্রাথমিক লক্ষণ। সঙ্গে ক্লান্তিবোধ হয়। অসুখ সেরে উঠতে মাস দেড়েক সময় লাগে। এ সময় খাবার-দাবারে সাবধান থাকতে হয়।
শীতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খেলে অনেক সময় গ্যাসট্রোএন্টেরাইটিস হতে পারে। ডায়রিয়া লুজ স্টুল। জ্বর এর প্রাথমিক লক্ষণ। দুর্বলতাও হতে পারে। বিশুদ্ধ পানি পান করা প্রয়োজন। রাস্তায় যেখান-সেখান থেকে পানি পান করবেন না। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা প্রয়োজন। হাইড্রেশন বজায় রাখা দরকার। অবস্থা বেশি খারাপ হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
সুস্থ থাকার জন্য এ সময় বিশুদ্ধ পানি পান করা জরুরি। খাবারের ক্ষেত্রে ঘরে তৈরি খাবারকে প্রাধান্য দিন। সুস্থ থাকুন।